স্বামী ও স্ত্রীকে কি সৃষ্টিকর্তা জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন
প্রশ্ন: কুরআন-সুন্নাহের মতে প্রত্যেক ব্যক্তির জোড়া কি আগে থেকে ঠিক করা? এবং যদি একাধিক বিয়ে করে সেটা কেমন করে হয়? আর যদি ছেলেদের বুকের পাজর দিয়ে মেয়ে সৃষ্টি হয় তাহলে একাধিক বিয়ের ক্ষেত্রে কি হবে?
উত্তর: জোড়ায় জোড়ায় দ্বারা স্বামী-স্ত্রী উদ্দেশ্য নয়। বরং নারী-পুরুষের বিভক্তি উদ্দেশ্য। প্রথমে এ সংক্রান্ত হাদিসটি দেখে নেই।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নারীকে পাঁজরের হাড় দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে। সে তোমার জন্য কখনোই সোজা হবে না। তার দ্বারা কাজ আদায় করতে হলে এই বাঁকা অবস্থায়ই আদায় করতে হবে। এটি সোজা করতে গেলে ভেঙ্গে যাবে। ভাঙ্গার অর্থ হল তালাক ঘটে যাওয়া। (সহিহ মুসলিম, হাদিস-১৪৬৮)
হাদিসে নারীদের পাজরের হাড় দ্বারা তৈরির কথা এসেছে। কিন্তু কার পাজরের হাড় দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে? তা হাদিসে বর্ণিত হয়নি।
সুতরাং না বুঝার কারণে অনেকে মনে করেন, স্বামীর পাজরের হাড় দিয়ে স্ত্রীকে তৈরি করা হয়েছে। একথাটি সম্পূর্ণ ভুল। একথার কোনো ভিত্তি নেই।
হ্যাঁ, হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামকে হজরত আদমের (আ.) পাজরের হাড় দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে। একথা সত্য।
কিন্তু এর মানে সব স্ত্রীলোককে তার স্বামীর পাজরের হাড় দিয়ে তৈরি করার দাবিটি অযৌক্তিক ও বানোয়াট।
একে তো এর পক্ষে কোন দলীল নেই। দ্বিতীয়ত এটি যুক্তিহীন কথা। কারণ, যেসব মেয়ে বাচ্চা শিশুকালেই মারা গেছে, বা বিবাহ ছাড়াই মারা গেছে, তাদের কার হাড় দিয়ে তৈরি করা হল?
হাদিসটির ব্যাখ্যা কী?
হাদিসে যে পাজরের হাড় দিয়ে তৈরির যে কথা বলা হয়েছে। এর দ্বারা দু’টি উদ্দেশ্য হতে পারে। যথা-
১- এটি কেবলি একটি উপমা। সত্যিই পাজরের হাড় দ্বারা তৈরি হওয়া উদ্দেশ্য নয়। নারীদের একটি সৌন্দর্য হল, তারা সাধারণতঃ একটু কথায় আচরণে বাঁকা স্বভাবের হয়ে থাকে। এটি সর্বক্ষেত্রে তাদের দোষ নয়। অনেক ক্ষেত্রেই সৌন্দর্য।
২- নারীরা বাবা আদমের (আ.) পাজরের হাড় দ্বারা তৈরি। স্বামীর পাজরের হাড় দ্বারা নয়। (তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম-১/১৩৭-১৩৮)