রায়ের ব্যাখ্যা দেওয়ার আপনি কে? ব্যারিস্টার খোকনকে আদালত
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্টে সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকনকে সতর্ক করেছেন আপিল বিভাগ। আদালত বলেছেন, আপিল বিভাগের রায়ের ব্যাখ্যা দেওয়ার আপনি কে?
বর্তমান সংসদের এমপিদের শপথকে ‘অসাংবিধানিক’ ব্যাখ্যা দেওয়া এবং এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ে ‘অস্পষ্টতা রয়েছে’ মর্মে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় খোকনকে সতর্ক করে এ কথা বলেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার এসব কথা বলেন।
আজ আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় থাকা ১৪ নম্বর মামলাটি শুনানিতে অংশ নিতে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ডায়াসের সামনে দাঁড়ান। এসময় তাকে উদ্দেশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কোনও রায়ের বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকলে আপনি রিভিউ করতে পারেন। পাবলিকলি রায় নিয়ে এসব কী বলে বেড়ান? এভাবে আপনি বলতে পারেন না।’
জবাবে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, ‘মহামান্য আদালত আমি রায়ে থাকা ফিকশন নিয়ে কথা বলেছি।’
এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘রায়ের ব্যাখ্যা দেবেন একমাত্র সুপ্রিম কোর্ট। আপনি ব্যাখ্যা দেওয়ার কে?’
এরপর আপিল বিভাগ ব্যারিস্টার খোকনের মামলার শুনানি গ্রহণ করেননি।
এর আগে ২০২৩ সালের ১ আগস্ট একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর ২৯০ সংসদ সদস্যদের শপথকে অবৈধ বলে করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে আপিল বিভাগের এ রায় নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কথা বলেন ব্যারিস্টার খোকন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের ২৯০ সংসদ সদস্য শপথ নেন। এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। নির্বাচিত ব্যক্তিরা সে বছরের ৯ জানুয়ারি শপথ নেন। একই বছরের ২৯ জানুয়ারি ওই সংসদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে, সংসদের মেয়াদ গণনা হবে সংসদের প্রথম বৈঠক থেকে পাঁচ বছর। তাই দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হয়নি। দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে শপথ নেওয়া হয়েছে। এমন যুক্তিতে একাদশ সংসদের ২৯০ সদস্যের নেওয়া শপথের বৈধতা নিয়ে ২০ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নেওয়া শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া রিট খারিজ করেছিলেন হাইকোর্ট।